ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আফগানদের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহর আক্ষেপের ‘৯৮’

ইনিংসের শেষ বল, তখনো একটা বাউন্ডারি বদলে দিতে পারে পুরো গল্প। ৯৭ রান করে ম্যাজিক ফিগার ছোঁয়ার অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শারজার গ্যালারিতে থাকা হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি সমর্থকের চিৎকারও যেন বেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সবাইকে স্তব্ধ করে দিল আজমতউল্লাহ ওমরজাইর করা শেষ বলটি।

 

ঠিকভাবে ব্যাটে-বলে লাগাতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। দুই রান নিতে গিয়ে উল্টো রানআউট হলেন। ৯৮ রানে গিয়ে থামলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। সেঞ্চুরির আক্ষেপ তার থেমে গেল ৯৮-তেই। তবে বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন ঠিকই শেষ বল পর্যন্ত টিকে থেকে।

 

 

প্রথম দুই ওয়ানডেতে থিতু হওয়ার সুযোগই পাননি মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ম্যাচে ২ ও পরের ম্যাচে ৩ রান করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন তিনি। এবার তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ এলো; কাজে লাগাতে আর ভুল করেননি ৩৮ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ৭২ রানে চার উইকেট হারানোর পরও ২৪৪ রানের পুঁজি পেল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ফিফটিতে দলের ভিত টেনে নেন প্রথমবার অধিনায়কত্ব করা মেহেদী হাসান মিরাজ।

 

ঠিক এক বছর আগেই বিশ্বকাপ মঞ্চে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর টানা বেশ কয়েকটি ম্যাচেই ছিলেন দুর্দান্ত। তবে সম্প্রতি সময়ে ব্যাটে সেভাবে অবদান রাখতে পারছিলেন না তিনি। আফগান সিরিজে এসে সেটা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। বিশেষ করে সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থাকায় অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যর্থতা দলের জন্যও ছিল বড় ভাবনার। শেষ পর্যন্ত যেন সব কিছুর জবাবই ২২ গজে দাঁড়িয়ে দিলেন তিনি।

 

 

ম্যাচের শুরুতে ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরপরই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। শুরুটা দারুণ দেখে ড্রেসিংরুমে বসে দেখা নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ছিলেন উচ্ছ্বসিত। সম্প্রচার ক্যামেরায় তিনি বলেন, ‘খুবই খুশি। আমরা যেভাবে শুরু করেছি; প্রথম দশ ওভার ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত।’ কিন্তু এরপর যেন ছন্দপতন। অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানআউটের শিকার হন জাকির হাসান।

 

পুরো সিরিজে ব্যর্থ তাওহীদ হৃদয় শেষবারও ছন্দে ফিরতে পারলেন না। ৭২ রানেই নেই ৪ ব্যাটার। তখন রানের চাকা এগিয়ে নিতে মিরাজকে সঙ্গ দিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৪৫ রানের জুটিতে সব চাপই দূর করে দিলেন তারা। শারজাতে যেকোনো উইকেটে রেকর্ড জুটিও হলো বটে। ১১৬ বলে ৬৬ রান করে ফেরেন মিরাজ। মন্থর ব্যাটিং হলেও দলের বিপদে ইনিংসটি গুরুত্বপূর্ণই ছিল মিরাজের। সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে যাওয়া মাহমুদউল্লাহও থেমেছিলেন ৯৮ রানে।

 

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ ঝরেছে শান্তর কণ্ঠেও, ‘রিয়াদ ভাই তার অভিজ্ঞতা দেখালেন আরও একবার। কিছুটা হতাশ, তার সেঞ্চুরিটা হতে পারতো! কিন্তু দল ভালো অবস্থানে আছে বলে আমি মনে করি।’ মাঠে না থাকলেও শান্তর চোখে রিয়াদের ব্যাটিং ছিল চোখজুড়ানোর স্বস্তি।

 

এবার বাকি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বোলারদের। রাতে শারজাতে ব্যাটিং কিছুটা কঠিন দেখা গেছে সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে। বাংলাদেশের বোলারদের তাই কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাসও বাড়াতে পারে পূর্বের রেকর্ড।

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

জনপ্রিয় সংবাদ

আফগানদের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহর আক্ষেপের ‘৯৮’

প্রকাশিত : ১১:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

ইনিংসের শেষ বল, তখনো একটা বাউন্ডারি বদলে দিতে পারে পুরো গল্প। ৯৭ রান করে ম্যাজিক ফিগার ছোঁয়ার অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শারজার গ্যালারিতে থাকা হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশি সমর্থকের চিৎকারও যেন বেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সবাইকে স্তব্ধ করে দিল আজমতউল্লাহ ওমরজাইর করা শেষ বলটি।

 

ঠিকভাবে ব্যাটে-বলে লাগাতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। দুই রান নিতে গিয়ে উল্টো রানআউট হলেন। ৯৮ রানে গিয়ে থামলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। সেঞ্চুরির আক্ষেপ তার থেমে গেল ৯৮-তেই। তবে বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন ঠিকই শেষ বল পর্যন্ত টিকে থেকে।

 

 

প্রথম দুই ওয়ানডেতে থিতু হওয়ার সুযোগই পাননি মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ম্যাচে ২ ও পরের ম্যাচে ৩ রান করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন তিনি। এবার তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ এলো; কাজে লাগাতে আর ভুল করেননি ৩৮ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ৭২ রানে চার উইকেট হারানোর পরও ২৪৪ রানের পুঁজি পেল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ফিফটিতে দলের ভিত টেনে নেন প্রথমবার অধিনায়কত্ব করা মেহেদী হাসান মিরাজ।

 

ঠিক এক বছর আগেই বিশ্বকাপ মঞ্চে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর টানা বেশ কয়েকটি ম্যাচেই ছিলেন দুর্দান্ত। তবে সম্প্রতি সময়ে ব্যাটে সেভাবে অবদান রাখতে পারছিলেন না তিনি। আফগান সিরিজে এসে সেটা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। বিশেষ করে সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থাকায় অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যর্থতা দলের জন্যও ছিল বড় ভাবনার। শেষ পর্যন্ত যেন সব কিছুর জবাবই ২২ গজে দাঁড়িয়ে দিলেন তিনি।

 

 

ম্যাচের শুরুতে ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরপরই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। শুরুটা দারুণ দেখে ড্রেসিংরুমে বসে দেখা নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ছিলেন উচ্ছ্বসিত। সম্প্রচার ক্যামেরায় তিনি বলেন, ‘খুবই খুশি। আমরা যেভাবে শুরু করেছি; প্রথম দশ ওভার ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত।’ কিন্তু এরপর যেন ছন্দপতন। অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানআউটের শিকার হন জাকির হাসান।

 

পুরো সিরিজে ব্যর্থ তাওহীদ হৃদয় শেষবারও ছন্দে ফিরতে পারলেন না। ৭২ রানেই নেই ৪ ব্যাটার। তখন রানের চাকা এগিয়ে নিতে মিরাজকে সঙ্গ দিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৪৫ রানের জুটিতে সব চাপই দূর করে দিলেন তারা। শারজাতে যেকোনো উইকেটে রেকর্ড জুটিও হলো বটে। ১১৬ বলে ৬৬ রান করে ফেরেন মিরাজ। মন্থর ব্যাটিং হলেও দলের বিপদে ইনিংসটি গুরুত্বপূর্ণই ছিল মিরাজের। সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে যাওয়া মাহমুদউল্লাহও থেমেছিলেন ৯৮ রানে।

 

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ ঝরেছে শান্তর কণ্ঠেও, ‘রিয়াদ ভাই তার অভিজ্ঞতা দেখালেন আরও একবার। কিছুটা হতাশ, তার সেঞ্চুরিটা হতে পারতো! কিন্তু দল ভালো অবস্থানে আছে বলে আমি মনে করি।’ মাঠে না থাকলেও শান্তর চোখে রিয়াদের ব্যাটিং ছিল চোখজুড়ানোর স্বস্তি।

 

এবার বাকি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বোলারদের। রাতে শারজাতে ব্যাটিং কিছুটা কঠিন দেখা গেছে সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে। বাংলাদেশের বোলারদের তাই কিছুটা বাড়তি আত্মবিশ্বাসও বাড়াতে পারে পূর্বের রেকর্ড।