ঢাকা , শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

এই প্রথম অধিনায়ক-নির্বাচক থেকে বোর্ড সভাপতি ফারুক

সেই ২০১২ সাল থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেটে নাজমুল হাসান পাপন যুগের অবশেষে অবসান হলো। পাপনের ১২ বছরের শাসন শেষে নতুন প্রধান পেল বাংলাদেশের ক্রিকেট।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হলেন সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ। তিনি একই সঙ্গে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ছিলেন। সে হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এ প্রথম সাবেক অধিনায়কদের মধ্যে কেউ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হলেন।

 

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্মলগ্ন স্বাধীনতার পরপরই। এরপর প্রায় ১৫ সভাপতি পেয়েছে দেশের ক্রিকেট। তবে এবারই প্রথম কোনো সাবেক অধিনায়ক দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে বসলেন।

 

১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন ব্যবস্থা শুরু হয়। তবে ক্রিকেটে বোর্ডের সভাপতি পদ সরকার কর্তৃক মনোনীত হতো। সবসময় কোনো এমপি বা সরকার মনোনীত কেউই এ পদে বসেছেন। ২০১৩ সাল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন হয়। এতে টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হন সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুই মেয়াদ পর তৃতীয় মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি পাপন। তিনি পদত্যাগ করায় তার স্থলাভিষিক্ত হন ফারুক আহমেদ।

 

 

বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটার ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন জাতীয় দলে। মূলত ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটার ছিলেন ফারুক আহমেদ। ১৯৮৮ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। একই দিনে অভিষেক হয়েছিল আকরাম খান ও ওয়াহিদুল গণির। ১৯৯০ সালে চন্ডিগড়ে ভারতের বিপক্ষে ৫৭ রান তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ। সে ম্যাচে তৃতীয় উইকেটে আতহার আলী খানের সঙ্গে ১০৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।

 

ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবেও সফল ছিলেন ফারুক আহমেদ। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩-৯৪ সালে জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয় তাকে। তার নেতৃত্বে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ফারুক আহমেদ।

 

 

ফারুক আহমেদ বাদেও অবশ্য জাতীয় দলের সাবেক কয়েকজন অধিনায়ক বর্তমান বোর্ডেই রয়েছে। টেস্ট অভিষেকের অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়, আকরাম খান ও খালেদ মাহমুদ সুজন পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন গত তিন মেয়াদ থেকেই। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের প্রথম অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ২০০৭ সালে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রধান নির্বাচক।

 

ফারুক আহমেদ অবশ্য এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন। বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ সভায় ফারুক আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার আগে বিসিবির বৈঠকে যোগ দেন ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদিন ফাহিম। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বোর্ড সভায় কমপক্ষে ৯ জনের উপস্থিত থাকার কথা। বোর্ড সভায় পরিচালকের মধ্যে ছিলেন কাজী ইনাম, মাহবুব আনাম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম স্বপন ও সালাউদ্দিন চৌধুরী।

 

 

আগেই পদত্যাগ করেন জালাল ইউনুস। এ ছাড়া আমন্ত্রণ পাননি আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হওয়ার আগে থেকে বিসিবির কাউন্সিলর ছিলেন ফারুক আহমেদ।

 

ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত পরিচালক হিসেবে তিনি যুক্ত হন বিসিবিতে। পরে উপস্থিত পরিচালকরা তাকে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন।

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

এই প্রথম অধিনায়ক-নির্বাচক থেকে বোর্ড সভাপতি ফারুক

প্রকাশিত : ০২:৩৮:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

সেই ২০১২ সাল থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেটে নাজমুল হাসান পাপন যুগের অবশেষে অবসান হলো। পাপনের ১২ বছরের শাসন শেষে নতুন প্রধান পেল বাংলাদেশের ক্রিকেট।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হলেন সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ। তিনি একই সঙ্গে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ছিলেন। সে হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এ প্রথম সাবেক অধিনায়কদের মধ্যে কেউ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হলেন।

 

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্মলগ্ন স্বাধীনতার পরপরই। এরপর প্রায় ১৫ সভাপতি পেয়েছে দেশের ক্রিকেট। তবে এবারই প্রথম কোনো সাবেক অধিনায়ক দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে বসলেন।

 

১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন ব্যবস্থা শুরু হয়। তবে ক্রিকেটে বোর্ডের সভাপতি পদ সরকার কর্তৃক মনোনীত হতো। সবসময় কোনো এমপি বা সরকার মনোনীত কেউই এ পদে বসেছেন। ২০১৩ সাল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন হয়। এতে টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হন সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুই মেয়াদ পর তৃতীয় মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি পাপন। তিনি পদত্যাগ করায় তার স্থলাভিষিক্ত হন ফারুক আহমেদ।

 

 

বাংলাদেশের সাবেক এই ক্রিকেটার ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন জাতীয় দলে। মূলত ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটার ছিলেন ফারুক আহমেদ। ১৯৮৮ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। একই দিনে অভিষেক হয়েছিল আকরাম খান ও ওয়াহিদুল গণির। ১৯৯০ সালে চন্ডিগড়ে ভারতের বিপক্ষে ৫৭ রান তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ। সে ম্যাচে তৃতীয় উইকেটে আতহার আলী খানের সঙ্গে ১০৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।

 

ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবেও সফল ছিলেন ফারুক আহমেদ। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩-৯৪ সালে জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয় তাকে। তার নেতৃত্বে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ফারুক আহমেদ।

 

 

ফারুক আহমেদ বাদেও অবশ্য জাতীয় দলের সাবেক কয়েকজন অধিনায়ক বর্তমান বোর্ডেই রয়েছে। টেস্ট অভিষেকের অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়, আকরাম খান ও খালেদ মাহমুদ সুজন পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন গত তিন মেয়াদ থেকেই। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের প্রথম অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ২০০৭ সালে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রধান নির্বাচক।

 

ফারুক আহমেদ অবশ্য এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন। বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ সভায় ফারুক আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার আগে বিসিবির বৈঠকে যোগ দেন ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদিন ফাহিম। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বোর্ড সভায় কমপক্ষে ৯ জনের উপস্থিত থাকার কথা। বোর্ড সভায় পরিচালকের মধ্যে ছিলেন কাজী ইনাম, মাহবুব আনাম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম স্বপন ও সালাউদ্দিন চৌধুরী।

 

 

আগেই পদত্যাগ করেন জালাল ইউনুস। এ ছাড়া আমন্ত্রণ পাননি আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হওয়ার আগে থেকে বিসিবির কাউন্সিলর ছিলেন ফারুক আহমেদ।

 

ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত পরিচালক হিসেবে তিনি যুক্ত হন বিসিবিতে। পরে উপস্থিত পরিচালকরা তাকে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন।