ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

এমবিবিএস ডিগ্রি না নিয়ে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার আইন কার্যকরের দাবি 

ডাক্তার পদবি ব্যবহারসংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী ২৭৩০/২০১৩ রিট নিষ্পত্তি এবং নূন্যতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতীত অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে না পারার আইন কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

 

শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরব (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ’- এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘চিকিৎসক-জনতার প্রতিবাদ সভা’ শীর্ষক কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

 

চিকিৎসকদের দাবি, ডাক্তার পদবি ব্যবহারসংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী ২৭৩০/২০১৩ রিট অনতিবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ‘নূন্যতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতিত অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবে না’ বিদ্যমান এই আইন কার্যকর করতে হবে।

 

 

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য পৃথিবীজুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কর্মে সহায়তা করার জন্য অ্যালাইড হেলথ প্রফেশন আছে। যেখানে নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফারি, বিভিন্ন কারিগরি বিষয় সংশ্লিষ্ট টেকনোলজিস্টসহ নির্দিষ্ট কিছু জনশক্তি রয়েছে যারা নির্দিষ্ট কর্ম বাস্তবায়ন করে থাকেন।

 

প্রত্যেকের উচিত তার নিজস্ব অবস্থানের স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন করা। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, নার্স যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্টসহ অন্যান্য টেকনোলজিস্টরা যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার তাহলে তো পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়বে।

 

তারা বলেন, ২০১৩ সালে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের (স্যাকমো) কয়েকজন বিএমডিসি আইনকে অবজ্ঞা করে নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার জন্য আদালতে একটি অযৌক্তিক, আইনবিরোধী রিট দায়ের করেন।

 

 

২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল এই রিটের প্রথম শুনানি হয়, তারপর থেকে এক অদৃশ্য কারণে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই রিটটি আদালতে ৬৭ বার কজ লিস্টে আসার পরও শুনানি হয়নি। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর এই রিটের ৬৭ তম শুনানি ছিল, কিন্তু ওইদিনও এই রিটের শুনানি হয়নি। এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

 

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, যারা ডাক্তার না তারা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে জনগণকে প্রতারিত করে যাচ্ছেন। যার কারণে অবাধে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য একটি বিশাল হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 

অবাধে স্টেরয়েড নামক ঔষুধ ব্যবহার হচ্ছে যা জনস্বাস্থ্যের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে, অনেক জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এরকম অসংখ্য অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে এই দেশের জনসাধারণ, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ।

 

কর্মসূচিতে ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস অফ বাংলাদেশের মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসেন, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক ফোরামের সভাপতি ডা. সামিউর রশিদ রিফাত, ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সভাপতি ডা. জাবিদ এবং প্রচার সম্পাদক ডা. আল মামুনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

জনপ্রিয় সংবাদ

এমবিবিএস ডিগ্রি না নিয়ে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার আইন কার্যকরের দাবি 

প্রকাশিত : ১২:২০:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

ডাক্তার পদবি ব্যবহারসংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী ২৭৩০/২০১৩ রিট নিষ্পত্তি এবং নূন্যতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতীত অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে না পারার আইন কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

 

শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরব (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ’- এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘চিকিৎসক-জনতার প্রতিবাদ সভা’ শীর্ষক কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

 

চিকিৎসকদের দাবি, ডাক্তার পদবি ব্যবহারসংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী ২৭৩০/২০১৩ রিট অনতিবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ‘নূন্যতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতিত অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবে না’ বিদ্যমান এই আইন কার্যকর করতে হবে।

 

 

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য পৃথিবীজুড়ে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কর্মে সহায়তা করার জন্য অ্যালাইড হেলথ প্রফেশন আছে। যেখানে নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিডওয়াইফারি, বিভিন্ন কারিগরি বিষয় সংশ্লিষ্ট টেকনোলজিস্টসহ নির্দিষ্ট কিছু জনশক্তি রয়েছে যারা নির্দিষ্ট কর্ম বাস্তবায়ন করে থাকেন।

 

প্রত্যেকের উচিত তার নিজস্ব অবস্থানের স্বকীয়তা বজায় রেখে নির্ধারিত কাজ বাস্তবায়ন করা। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, নার্স যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্টসহ অন্যান্য টেকনোলজিস্টরা যদি দাবি করেন তারা ডাক্তার তাহলে তো পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়বে।

 

তারা বলেন, ২০১৩ সালে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের (স্যাকমো) কয়েকজন বিএমডিসি আইনকে অবজ্ঞা করে নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার জন্য আদালতে একটি অযৌক্তিক, আইনবিরোধী রিট দায়ের করেন।

 

 

২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল এই রিটের প্রথম শুনানি হয়, তারপর থেকে এক অদৃশ্য কারণে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই রিটটি আদালতে ৬৭ বার কজ লিস্টে আসার পরও শুনানি হয়নি। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর এই রিটের ৬৭ তম শুনানি ছিল, কিন্তু ওইদিনও এই রিটের শুনানি হয়নি। এভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে বারবার পেছানোর মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষকে সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির মৌলিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

 

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, যারা ডাক্তার না তারা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে জনগণকে প্রতারিত করে যাচ্ছেন। যার কারণে অবাধে শক্তিশালী এন্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স এ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য একটি বিশাল হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

 

অবাধে স্টেরয়েড নামক ঔষুধ ব্যবহার হচ্ছে যা জনস্বাস্থ্যের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে, অনেক জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এরকম অসংখ্য অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে এই দেশের জনসাধারণ, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ।

 

কর্মসূচিতে ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস অফ বাংলাদেশের মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসেন, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক ফোরামের সভাপতি ডা. সামিউর রশিদ রিফাত, ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সভাপতি ডা. জাবিদ এবং প্রচার সম্পাদক ডা. আল মামুনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।