ঢাকা , রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

সারা দেশে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা কোটাবিরোধীদের

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারা দেশে।

 

গত চার দিন শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এবার সারা দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

 

 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলাভবন, ভিসি চত্বর ও টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান শুরু করেন। এরপর বিকেল ৬টায় তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়েন।

 

কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যেভাবে আমাদের চার দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে, সেভাবেই তা চলতেই থাকবে। এখন পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ বা সরকারের কোনো দপ্তর থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং কোনোরকম আশ্বস্তও করেনি। এজন্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।

 

 

আগামীকাল (শুক্রবার) চার দফার ভিত্তিতে অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে, এটা সারা দেশেই সমন্বিতভাবে করা হবে। আগামী শনিবার (৬ জুলাই) সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। আগামী রোববার সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের মতো ধর্মঘট পালন করা হবে।

 

তিনি আরও বলেন, আদালতের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। আদালত আদালতের মতো কাজ করবে, আমরা আমাদের মতো আন্দোলন করব। আমাদের এক দফা এক দাবি রাজপথ থেকে আদায় করব। ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিলের ঘটনা নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যকার সমন্বয়হীনতার বহিঃপ্রকাশ। কারণ, নির্বাহী বিভাগের আদেশ বিচার বিভাগ বাতিল করে দিচ্ছে। আমরা দেখতে চাই, এ রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরকার কোনো দ্বন্দ্বের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক না থাকুক। রাষ্ট্রযন্ত্রের যন্ত্রের এ সমস্ত নাটক আর সহ্য করা হবে না। কোর্ট এবং ছাত্রসমাজকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র আর বরদাস্ত করা হবে না। আদালতের প্রতি আমাদের একটি সুপারিশ থাকবে, আমাদের দাবিগুলো যেন বিবেচনা করা হয়। নির্বাহী বিভাগকে প্রশ্ন করতে চাই, তারা কি এমন পরিপত্র বাতিল জারি করল যেটা পাঁচ বছরের মধ্যে বাতিল হয়ে যায়? তারা যথাযোগ্যভাবে এ পরিপত্র জারি করতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে রীতিমতো প্রহসন করা হয়েছে।

 

 

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, আগামীকাল শুক্রবারেও আমাদের কর্মসূচি বন্ধ থাকবে না, আমরা অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের চার দফা দাবিকেন্দ্রিক ব্যাপক প্রচারণা চালাব। শনিবারে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববারে সারা দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করব আমরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।

 

পুরো কর্মসূচিজুড়ে আন্দোলনকারীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘ছাত্রসমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।

 

আন্দোলনকারীরা জানান, ২০১৮ সালে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে অন্যায্য ও অযৌক্তিক ৫৬ শতাংশ কোটার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৪ঠা অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরি (নবম-ত্রয়োদশ গ্রেড) থেকে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের ঘোষণা দিয়ে পরিপত্র জারি করে। কোটাবৈষম্য নিরসন ছিল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রাণের দাবি। গত ছয় বছর ধরে সেই অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছে এবং একটি মেধাভিত্তিক দক্ষ প্রশাসন তৈরিতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রস্তুত করছে।

 

তারা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় গত ৫ জুন মহামান্য হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে রায় দিয়েছে এবং ২০১৮ সালে জারিকৃত সরকারের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আমরা মনে করি, হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। পুনরায় কোটা ফিরে আসা মানে দেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুণীদের দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে প্রহসন। মুক্তিযুদ্ধের যে মূলমন্ত্র- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার তা নিশ্চিত করতে এবং একটি দক্ষ প্রশাসন গড়তে মেধাভিত্তিক নিয়োগের বিকল্প নেই।

 

 

তারা আরও বলেন, এ কোটাবৈষম্য নিরসন এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানাচ্ছি। সেগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

প্রসঙ্গত, একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের কোটা ব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা হয়।

 

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

সারা দেশে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা কোটাবিরোধীদের

প্রকাশিত : ১০:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ সারা দেশে।

 

গত চার দিন শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এবার সারা দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

 

 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলাভবন, ভিসি চত্বর ও টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান শুরু করেন। এরপর বিকেল ৬টায় তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়েন।

 

কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যেভাবে আমাদের চার দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে, সেভাবেই তা চলতেই থাকবে। এখন পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ বা সরকারের কোনো দপ্তর থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং কোনোরকম আশ্বস্তও করেনি। এজন্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।

 

 

আগামীকাল (শুক্রবার) চার দফার ভিত্তিতে অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে, এটা সারা দেশেই সমন্বিতভাবে করা হবে। আগামী শনিবার (৬ জুলাই) সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। আগামী রোববার সব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের মতো ধর্মঘট পালন করা হবে।

 

তিনি আরও বলেন, আদালতের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অবস্থান নেই। আদালত আদালতের মতো কাজ করবে, আমরা আমাদের মতো আন্দোলন করব। আমাদের এক দফা এক দাবি রাজপথ থেকে আদায় করব। ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিলের ঘটনা নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যকার সমন্বয়হীনতার বহিঃপ্রকাশ। কারণ, নির্বাহী বিভাগের আদেশ বিচার বিভাগ বাতিল করে দিচ্ছে। আমরা দেখতে চাই, এ রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরকার কোনো দ্বন্দ্বের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক না থাকুক। রাষ্ট্রযন্ত্রের যন্ত্রের এ সমস্ত নাটক আর সহ্য করা হবে না। কোর্ট এবং ছাত্রসমাজকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র আর বরদাস্ত করা হবে না। আদালতের প্রতি আমাদের একটি সুপারিশ থাকবে, আমাদের দাবিগুলো যেন বিবেচনা করা হয়। নির্বাহী বিভাগকে প্রশ্ন করতে চাই, তারা কি এমন পরিপত্র বাতিল জারি করল যেটা পাঁচ বছরের মধ্যে বাতিল হয়ে যায়? তারা যথাযোগ্যভাবে এ পরিপত্র জারি করতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে রীতিমতো প্রহসন করা হয়েছে।

 

 

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, আগামীকাল শুক্রবারেও আমাদের কর্মসূচি বন্ধ থাকবে না, আমরা অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের চার দফা দাবিকেন্দ্রিক ব্যাপক প্রচারণা চালাব। শনিবারে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববারে সারা দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করব আমরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।

 

পুরো কর্মসূচিজুড়ে আন্দোলনকারীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘ছাত্রসমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।

 

আন্দোলনকারীরা জানান, ২০১৮ সালে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে অন্যায্য ও অযৌক্তিক ৫৬ শতাংশ কোটার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৪ঠা অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরি (নবম-ত্রয়োদশ গ্রেড) থেকে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের ঘোষণা দিয়ে পরিপত্র জারি করে। কোটাবৈষম্য নিরসন ছিল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রাণের দাবি। গত ছয় বছর ধরে সেই অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছে এবং একটি মেধাভিত্তিক দক্ষ প্রশাসন তৈরিতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রস্তুত করছে।

 

তারা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় গত ৫ জুন মহামান্য হাইকোর্ট সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে রায় দিয়েছে এবং ২০১৮ সালে জারিকৃত সরকারের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আমরা মনে করি, হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। পুনরায় কোটা ফিরে আসা মানে দেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুণীদের দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে প্রহসন। মুক্তিযুদ্ধের যে মূলমন্ত্র- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার তা নিশ্চিত করতে এবং একটি দক্ষ প্রশাসন গড়তে মেধাভিত্তিক নিয়োগের বিকল্প নেই।

 

 

তারা আরও বলেন, এ কোটাবৈষম্য নিরসন এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানাচ্ছি। সেগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

প্রসঙ্গত, একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের কোটা ব্যবস্থা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা হয়।