ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সুরক্ষা নিশ্চিতে আন্দোলনে থাকা চিকিৎসকদের চার দাবি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের মারধর ও লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে চিকিৎসকরা সারা দেশে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। সুরক্ষা যতক্ষণ না নিশ্চিত হয় চার দাবিতে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

 

২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামে দাবি পূরণ না হওয়ায় রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসকরা এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

 

তারা বলেন, আমরা কেউই সুরক্ষিত না। ১৮ ঘণ্টা পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। প্রশাসনের ব্যর্থতা, রোগী হত্যার দায়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি। ঢামেকসহ দেশের সব জেলা, উপজেলা এমনকি চেম্বারও বন্ধ থাকবে।

 

 

তাদের দেওয়া দাবিগুলো হলো : নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সব হাসপাতালে নিরাপত্তা ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

যতক্ষণ না সুরক্ষা নিশ্চিত হবে ততক্ষণ এই কর্মসূচি চলবে উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন জরুরি বিভাগও বন্ধ থাকবে। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাও বন্ধ থাকবে।

 

সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দিপ্তকে ঘিরে এ ঘটনার সূত্রপাত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে। মারধর করা হয় দায়িত্বরত এক চিকিৎসককে। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলের এ ঘটনার পর মধ্যরাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একটি পক্ষ আবার হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। ভাঙচুর চালানসহ চিকিৎসকদের মারধরও করা হয়।

 

 

এ ঘটনার বিচার দাবিতে রোববার সকাল থেকে চিকিৎসকরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে তারা নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি তোলেন।

 

তারা হাসপাতালটির পরিচালকের কক্ষের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের রুদ্ধদ্বার আলোচনা চলে। তবে কোনো সুরাহা না হওয়ায় চিকিৎসকরা সারা দেশে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন। এরপরও পরিচালক তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে যান।

 

এদিন সকাল থেকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আগত রোগীদের ভিড় বাড়তে থাকে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

 

 

উল্লেখ্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসকের ওপর হামলা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

 

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

 

সারজিস আলম বলেন, আমার ডাক্তার ভাইদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপরে যে বা যারা হাত তুলেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।

 

তিনি বলেন, যদি কোনো পেশেন্টের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা কোনো ডাক্তার দায়ী থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তারও বিচার হতে হবে। আন্দোলনের এ সমস্বয়ক বলেন, আমার মনে হলো আর আমি কারও গায়ে হাত তুলে ফেললাম, এই স্পর্ধা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। সব চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা সোচ্চার আছে।

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

সুরক্ষা নিশ্চিতে আন্দোলনে থাকা চিকিৎসকদের চার দাবি

প্রকাশিত : ০৪:০৪:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের মারধর ও লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে চিকিৎসকরা সারা দেশে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। সুরক্ষা যতক্ষণ না নিশ্চিত হয় চার দাবিতে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

 

২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামে দাবি পূরণ না হওয়ায় রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসকরা এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

 

তারা বলেন, আমরা কেউই সুরক্ষিত না। ১৮ ঘণ্টা পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। প্রশাসনের ব্যর্থতা, রোগী হত্যার দায়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি। ঢামেকসহ দেশের সব জেলা, উপজেলা এমনকি চেম্বারও বন্ধ থাকবে।

 

 

তাদের দেওয়া দাবিগুলো হলো : নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সব হাসপাতালে নিরাপত্তা ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

যতক্ষণ না সুরক্ষা নিশ্চিত হবে ততক্ষণ এই কর্মসূচি চলবে উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন জরুরি বিভাগও বন্ধ থাকবে। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাও বন্ধ থাকবে।

 

সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দিপ্তকে ঘিরে এ ঘটনার সূত্রপাত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে। মারধর করা হয় দায়িত্বরত এক চিকিৎসককে। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলের এ ঘটনার পর মধ্যরাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একটি পক্ষ আবার হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। ভাঙচুর চালানসহ চিকিৎসকদের মারধরও করা হয়।

 

 

এ ঘটনার বিচার দাবিতে রোববার সকাল থেকে চিকিৎসকরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে তারা নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি তোলেন।

 

তারা হাসপাতালটির পরিচালকের কক্ষের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের রুদ্ধদ্বার আলোচনা চলে। তবে কোনো সুরাহা না হওয়ায় চিকিৎসকরা সারা দেশে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন। এরপরও পরিচালক তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে যান।

 

এদিন সকাল থেকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আগত রোগীদের ভিড় বাড়তে থাকে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

 

 

উল্লেখ্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসকের ওপর হামলা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

 

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

 

সারজিস আলম বলেন, আমার ডাক্তার ভাইদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপরে যে বা যারা হাত তুলেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।

 

তিনি বলেন, যদি কোনো পেশেন্টের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা কোনো ডাক্তার দায়ী থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তারও বিচার হতে হবে। আন্দোলনের এ সমস্বয়ক বলেন, আমার মনে হলো আর আমি কারও গায়ে হাত তুলে ফেললাম, এই স্পর্ধা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। সব চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা সোচ্চার আছে।