দীর্ঘ ১০ ঘন্টার চিরুণী অভিযানের পর পতেঙ্গার কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়া বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের (ইয়াক-১৩০) ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছে নৌ বাহিনীর অভিযানকারী দল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে এম শফিউল আজম এবং ওএসপি, জিইউপি, এনডিসি, পিএসসি ও নৌ বাহিনীর উদ্ধারকারি দল।
জানা যায়, বিমানের ভগ্নাংশ খুঁজে পেতে বিমান বাহিনীর আধুনিক উদ্ধার জাহাজ ‘বলবান’ বিমানের ভাঙা অংশ উদ্ধারে কাজ চালিয়েছেন।
এছাড়াও বিমানটি খুঁজতে বিশেষ ‘সোনার সিস্টেম’ও ব্যবহার করা হয়েছিলো। উদ্ধারকারীরা তিন ভাগে বিমানটি খুঁজছেন। যে জায়গায় বিমানটি পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে সেখানে লাল রংয়ের একটি বেলুন দিয়ে শনাক্ত করেছেন, সেখানে ডুবুরি দিয়ে খোঁজা হয়েছিলো।
অন্য একটি দল নদীর পাড়ে খোঁজ চালিয়েছিলেন। এছাড়া আরেকটি দল জহুরুল হক ঘাঁটিতে বসে সবকিছু মনিটরিং করছিলেন। অবশেষে নদীতে নৌ বাহিনীর ডুবুরী দল নামার এক ঘন্টার মধ্যে বিমানটি নদীতে সনাক্ত করে উপরে জাহাজে তুলতে সক্ষম হন বলে জানান নৌ বাহিনীর কর্মকর্তাগণ। উদ্ধারে সেনা, নৌ, বিমান সহ ফায়ার সার্ভিস এর লোকজন কাজ করেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পতেঙ্গা এলাকার কর্ণফুলী নদীর মোহনায় চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের ১১ নম্বর ঘাটের নতুন পতেঙ্গা টার্মিনালের অপর পাশে এইচএম স্টিল মিল প্রান্তে বিমানটি আঁছড়ে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় যান্ত্রিক ক্রুটির ফলে আগুন লেগে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এ সময় পাইলট উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন, পিএসসি এবং স্কোয়াড্রন লীডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরী প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে নেমে পড়েন।
পরে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে তাদেরকে উদ্ধার করে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইলট আসিম জাওয়াদ মারা যান।
অপর পাইলট মো. সোহান হাসান খান বর্তমান চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃত্যুকালে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের বয়স হয়েছিল ৩২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।