গাজীপুরে ফায়ার গেমস ও কার্টুনে আসক্ত হয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে ৬বছরের শিশু রাফিয়া মুনতাহা। পরে নিজেই আবার আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এতে তার শরীরের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। শিশুটি এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শনিবার (৩০ মার্চ) রাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় এক হাতসহ বুক ও পেট পুরোটাই ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় শুয়ে আছে শিশু মুনতাহা। এ সময় বেডের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তার জিন্নাত জাহান।
এ সময় তিনি টাইমস বাংলাকে জানান, ‘তার মেয়ে স্মার্ট টিভিতে সার্চ করে ও পাশাপাশি স্মার্টফোনে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজের কার্টুন দেখে। যেমন ফায়ার গেমসসহ অন্যান্য আরও অনেক ধরনের কার্টুন। সেই সব ওয়েব সিরিজের কার্টুনগুলোতে দেখা যায় নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আবার নিভিয়ে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কার্টুন তো কার্টুনই। ছোট শিশু না বুঝে সেসব কার্টুন দেখে চুলার সামনে গিয়ে তার শরীরের সুতির জামা এক অংশ তার দুই হাত দিয়ে মুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আবার নেভানোর চেষ্টা করে কিন্তু নেভাতে পারে না। হটাৎ দাউ দাউ করে শরীরে আগুন ধরে যায়। এ সময় বাসার লোকজন তাকে জাপটে ধরে আগুন নিভিয়ে ফেলে। ততক্ষণে তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায়।
জানা যায়, ‘শিশু রাফিয়া মুনতাহা গাজীপুর সদর উত্তর ছায়াবীথি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। তার বাবার নাম এসএম মাহমুদুল হাসান। তিনি একজন ফার্মাসিস্ট। মুনতাহার ছোট আরেকটি বোনও রয়েছে।’
তবে আগুনের ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে তার নানার বাসায় গাজীপুর সদরের আড়িনাল এলাকায়। গাজীপুর নবারন বিদ্যাপীঠ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লেতে পড়াশোনা করেন শিশু রাফিয়া মুনতাহা।
ঘটনার পরপরই মুনতাহাকে দগ্ধ অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে শনিবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এদিকে শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হঠাৎ ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভিজিট করেন। এ সময় জরুরি বিভাগে থাকা বেশ কয়েকটা রোগীর পাশাপাশি দগ্ধ রাফিয়া মুনতাহার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক ডা. হোসাইন ইমাম ইমু জানান, শিশুটির ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে আজ সকালে ভর্তি করেছে৷ এখন তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’