হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুনির্মল রায়ের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বিক্ষোভ, সংবাদ সম্মেলন ও সর্বশেষ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
কলেজে না গিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অধ্যক্ষ। তবে তার দাবি পালিয়ে নয়, কলেজের কাজের জন্য মন্ত্রণালয়ে ঘুরছেন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করলেও শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগে অনড় রয়েছেন।
অধ্যক্ষের দাবি, শিক্ষার্থীরা পদত্যাগ করাতে পারেন না; তবে মন্ত্রণালয় চাইলে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সূত্রমতে, গত এক সপ্তাহ ধরে হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট ও অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
এসব কর্মকাণ্ডের পর অধ্যক্ষ কলেজে না গিয়ে নিজেকে বাঁচাতে মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। এর মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তাদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে পড়েছে। নামেমাত্র কলেজ হলেও নেই ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা। পদত্যাগ, স্থায়ী ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা ও অনিয়মের তদন্তসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।
কলেজের শিক্ষার্থী রিংকু জানান, কলেজ বন্ধ করা হলেও তার পদত্যাগের দাবিতে আমরা এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ সুনির্মল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি জাতীয় দৈনিককে জানান, কলেজকে পাঠ্যোপযোগী করতে মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তিনি মোকাবিলা করবেন, তবে সময় লাগবে। এজন্য তাকে সময় দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই নতুন নতুন অভিযোগ আনছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি ওদের আন্ডারে নই, আমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরি করি। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
কলেজে যান না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজের উন্নতির জন্য আমাকে প্রায় সময়ই মন্ত্রণালয় ও সচিবালয়ে থাকতে হয়। সব সময় চিঠি চালাচালি করে কাজ হয় না, সশ্বরীরে থেকে কাজ আদায় করতে হয় এ জন্য এখানে থাকতে হচ্ছে। এমন তো নয় যে, আমি মাসের পর মাস কলেজে যাই না। এ ছাড়া আমি ক্লাস ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা খোঁজখবর রাখি।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদত্যাগ শিক্ষার্থীদের এখতিয়ার না। তবে মন্ত্রণালয় চাইলে আমি পদত্যাগ করব। এখন সারা দেশে একটি সুযোগে আমার শিক্ষার্থীরা বেশি বাড়াবাড়ি করছে।
তিনি আরও বলেন, কলেজ ভাঙচুর ও উচ্ছৃঙ্খলা থেকে বাঁচাতে আমি অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছি।