বর্তমান সময়ে এক ভয়াবহ আতঙ্কের নাম রাসেল ভাইপার। ধীরে ধীরে এ বিষধর সাপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোতে এ আতঙ্ক এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে যে, সাপ দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে।
ঘরের ভেতরে-বাইরে, ক্ষেত-খামারে সব জায়গায় সাপের বিচরণ। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে ডিম আবার কোথাও পাওয়া যাচ্ছে সাপের বাচ্চা। বিষধর এ সাপের হাত থেকে রক্ষা পেতে টেলিভিশন-পত্রিকা এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো হচ্ছে জোরালো প্রচারণা। ফলে সাপ দেখলেই মেরে ফেলছে সাধারণ মানুষ।
দেশের সর্ব দক্ষিণে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় গত দুইদিনে মারা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সাপ। ছোট বড় যেকোনো প্রজাতির সাপ দেখলেই মারা হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে। বর্ষাকাল হওয়ায় এসব এলাকার খাল, বিল সব জায়গায় পানিতে দেখা মিলছে সাপের।
এ ছাড়া জোয়ারের পানিতেও লোকালয়ে ভেসে আসছে অনেক সাপ। ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষ না চিনেই রাসেল ভাইপার মনে করে তাৎক্ষণিক পিটিয়ে মারছে অন্য প্রজাতির সাপ।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, রাসেল ভাইপার সন্দেহে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ মারলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। সাপ না মেরে বন বিভাগ বা সাপ উদ্ধার করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে জানালে তারা উদ্ধার করে নিয়ে যাবে।
এদিকে বরগুনা জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা বিশেষ করে পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি জেলায় রাসেল ভাইপারের দেখা মিললেও বরগুনা জেলায় এখনও দেখা পাওয়া যায়নি এ সাপ। তবে ইতোমধ্যে দেশের ২৫ জেলায় ভয়ংকর এ সাপ ছড়িয়ে পড়ায় সবাইকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পাথরঘাটা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা বলেন, সাপে কামড় দিলে ওঝা কিংবা কবিরাজের কাছে না গিয়ে সরাসরি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে হবে। তাহলে রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে গেলে রোগী খারাপ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, বিষাক্ত সাপ রাসেলস ভাইপার কামড় দিলে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দিতে পারলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডা. মাসুদ রানা আরও বলেন, এ ছাড়া সাপের বিষ শরীরে ছড়িয়ে পড়লে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত ও কিডনির ক্ষতিসহ হতে পারে মারাত্মক সমস্যা।