ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সুন্দরবনে ৯৮টি হরিণ ও ৯টি বন্য শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৫ দিনে সুন্দরবন থেকে হরিণসহ ১০৭টি মৃত প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯৮টিটি হরিণ ও ৯টি শূকর। মৃত প্রাণী গুলোকে কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ প্লাবিত হয়েছে। মিষ্টি পানির পুকুরগুলো সব লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ঝড়ের পরে বনের কটকা, কচিখালী, করমজল ,পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলারচর ও নারিকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হরিণের ৯৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৯টি বন্য শূকরের মরদেহ পাওয়া গেছে। এসব মরদেহ মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
মৃত বন্যপ্রাণী ছাড়াও জীবন্ত প্রাণীও উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপদাপন্ন ১৮টি জীবিত হরিণ এবং একটি জীবিত অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সাধারণত জলোচ্ছ্বাস হলে বন্যপ্রাণীরা উঁচু স্থান ও গাছে আশ্রয় নেয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বনের ভেতর অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ফলে বনের উঁচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আশ্রয় নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অধিক জ্বলোচ্ছ্বাসের ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে না যেতে পেরে হরিণগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পূর্ব বন বিভাগের কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও মিঠা পানির পুকুর সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে নোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।