ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

প্রস্তাবিত সাইবার আইন মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার: টিআইবি

প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা, ২০২৪ মতপ্রকাশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তায় তৈরি খসড়া বিধিমালায় অনেক অসংগতি রয়েছে। আইনে ফাঁক থাকলে বিধিমালা ভালো হতে পারে না।

 

তিনি বলেন, প্রথমে সাইবার নিরাপত্তা আইনে বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে বিধিমালাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

 

 

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ‘প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

 

বিধিমালাটি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন খসড়ায় দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই পরিবর্তিত মোড়ক এবং সমভাবে নিবর্তনমূলক।

 

 

তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর মাধ্যমে তথ্য ও মত-প্রকাশের যে অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই ডিএসএ’র অবিকল সিএসএ প্রণীত হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মতপ্রকাশের যে সুযোগ প্রসারিত হয়েছে, (এই আইন দিয়ে) তা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।

 

তিনি বলেন, ‘আইনে প্রচুর পরিমাণ অস্পষ্টতা আছে। এতে জনগণের স্বাধীনতা আরও ব্যাপক হারে ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খসড়া বিধিমালা তৈরিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন দেখা যায়নি।

 

 

সাইবার নিরাপত্তা বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেশ ও দেশের বাইরে সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে আইনে কোনো নির্দেশনা নেই। এই বিধিমালা প্রস্তুত করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া প্রয়োজন।  অন্যথায় এই আইন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকবে। ’

 

টিআইবি জানায়, সাইবার নিরাপত্তা রক্ষায় জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের উদ্যোগ যথাযথ। তবে এতে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া আছে, তাতে দক্ষ জনবলের অভাব ও সমন্বয়হীনতা দেখা দেবে। ফলে জনগণের করের অর্থ ব্যয় ছাড়া ‘মাথাভারী’ এই প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে না। আবার ডিজিটাল ফরেন্সিক ল্যাবে দক্ষ জনবল না থাকলে মানসম্মত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে না, ফলে আদালত থেকে তা গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। ফলশ্রুতিতে বাড়বে মামলা-জট। সাইবার আক্রমণগুলো সাধারণত দেশের বাইরে থেকে করা হয়। বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে কীভাবে কাজ করা হবে, কীভাবে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা যাবে, তা নিয়েও কোনো আইন নেই। এ ছাড়াও বিধিমালায় আইনের সঙ্গে অনেক অসংগতি, বাংলা শব্দচয়ন ও বানান রীতিতে অনেক ভুল পরিলক্ষিত হয়েছে।

 

 

এসব সমস্যা সমাধানে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টিআইবি সরকারের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা জানিয়েছে।

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

প্রস্তাবিত সাইবার আইন মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার: টিআইবি

প্রকাশিত : ১১:১৭:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা, ২০২৪ মতপ্রকাশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তায় তৈরি খসড়া বিধিমালায় অনেক অসংগতি রয়েছে। আইনে ফাঁক থাকলে বিধিমালা ভালো হতে পারে না।

 

তিনি বলেন, প্রথমে সাইবার নিরাপত্তা আইনে বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে বিধিমালাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

 

 

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ‘প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

 

বিধিমালাটি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন খসড়ায় দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই পরিবর্তিত মোড়ক এবং সমভাবে নিবর্তনমূলক।

 

 

তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর মাধ্যমে তথ্য ও মত-প্রকাশের যে অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই ডিএসএ’র অবিকল সিএসএ প্রণীত হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মতপ্রকাশের যে সুযোগ প্রসারিত হয়েছে, (এই আইন দিয়ে) তা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।

 

তিনি বলেন, ‘আইনে প্রচুর পরিমাণ অস্পষ্টতা আছে। এতে জনগণের স্বাধীনতা আরও ব্যাপক হারে ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খসড়া বিধিমালা তৈরিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন দেখা যায়নি।

 

 

সাইবার নিরাপত্তা বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেশ ও দেশের বাইরে সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে আইনে কোনো নির্দেশনা নেই। এই বিধিমালা প্রস্তুত করার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া প্রয়োজন।  অন্যথায় এই আইন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকবে। ’

 

টিআইবি জানায়, সাইবার নিরাপত্তা রক্ষায় জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের উদ্যোগ যথাযথ। তবে এতে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া আছে, তাতে দক্ষ জনবলের অভাব ও সমন্বয়হীনতা দেখা দেবে। ফলে জনগণের করের অর্থ ব্যয় ছাড়া ‘মাথাভারী’ এই প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে না। আবার ডিজিটাল ফরেন্সিক ল্যাবে দক্ষ জনবল না থাকলে মানসম্মত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে না, ফলে আদালত থেকে তা গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। ফলশ্রুতিতে বাড়বে মামলা-জট। সাইবার আক্রমণগুলো সাধারণত দেশের বাইরে থেকে করা হয়। বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে কীভাবে কাজ করা হবে, কীভাবে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা যাবে, তা নিয়েও কোনো আইন নেই। এ ছাড়াও বিধিমালায় আইনের সঙ্গে অনেক অসংগতি, বাংলা শব্দচয়ন ও বানান রীতিতে অনেক ভুল পরিলক্ষিত হয়েছে।

 

 

এসব সমস্যা সমাধানে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টিআইবি সরকারের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা জানিয়েছে।