ঢাকা , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানীতে শর্তে মিলছে ভোজ্যতেল

অস্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। সে হিসেবে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

 

বাজারে ভোজ্যতেলের দেখা দিয়েছে সংকট, বেড়েছে দামও। এদিকে বাজারে আমদানি বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। এতে জনমনে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি।

 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, ঝিগাতলা, কাঁঠাল বাগান ঘুরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

 

 

জানা গেছে, বাজারে তীর, ফ্রেশ, পুষ্টিসহ কয়েকটি কোম্পানির তেল পাওয়া গেলেও তা শর্তসাপেক্ষে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, কোম্পানি শর্ত দিয়ে তেল সাপ্লাই দিচ্ছে। শর্তানুযায়ী এক কার্টন তেলের সঙ্গে ১ বস্তা আটা, সুজি ও চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে কোনো ক্রেতা তেলের সঙ্গে শর্তের পণ্য না নিলে কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে।

 

বর্তমানে বাজারে খোলা পামঅয়েল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৮ টাকা, প্রতি লিটার ১৬০ টাকা দরে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও মিলছে না ১ লিটারের বোতল। ৫ লিটারের ক্যানোলা ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৮১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

 

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি ইলিয়াস কালবেলাকে বলেন, এভাবে শর্ত দিয়ে তেল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। ফলে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল করতে হলে সরকার ও কোম্পানির মধ্যে সমঝোতা দরকার।

 

 

 

নিউমার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী আজাদ হোসেন বলেন, মূলত বাজারে তেলের সংকট তৈরি করেছে কোম্পানিগুলো। তারা তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে; কিন্তু সরকার চলমান দাম বহাল রাখতে চাপ দিচ্ছে কোম্পানিদের। এতে তেল আটকে রেখে বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে কোম্পানিগুলো।

 

এদিকে, শহরে জেঁকে বসেছে শীত। বাজারে ভরপুর মিলছে শীতকালীন সবজি। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা ও পাড়া-মহল্লার বাজারে। গত সপ্তাহের ৭০ টাকার লম্বা বেগুন ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ৬০ টাকার বাঁধাকপি ও ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ১৫০ টাকার ইন্ডিয়ান টমেটো ১৪০ টাকা, ৮০ থেকে ৯০ টাকার শিম পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, ৭০ টাকার চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, মুলা ১০ টাকা কমে ৪০-৫০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো প্রতি পিস লাউ ৫০, শালগম ৮০, লেবুর হালি ১৫-২৫, করলা ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৬০, কচুরলতি ৬০, বরবটি-ঢ্যাঁড়শ ৮০, গাজর ১০০, কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

 

শুল্ক ছাড়ের দেড় মাস পর দাম কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে নতুন আলু বাজারে এলেও দাম কমেনি পণ্যাটির। আগের মতো পুরান আলু ৭৫-৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া দেশি রসুন মানভেদে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা ও আমদানি রসুন ২৩০-২৪০ টাকা। এ ছাড়া ২৯০ টাকার সোনালি মুরগি ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা দরে। ১ কেজি ওজনের ১৯০ টাকার ব্রয়লার পাওয়া যাচ্ছে ২০০ টাকায়। অপরিবর্তিত ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি ৪৫-৫০ টাকা ও হাঁসের ডিমের হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

 

 

 

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্য ইমেইল

রাজধানীতে শর্তে মিলছে ভোজ্যতেল

প্রকাশিত : ১০:১৭:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

অস্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। সে হিসেবে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

 

বাজারে ভোজ্যতেলের দেখা দিয়েছে সংকট, বেড়েছে দামও। এদিকে বাজারে আমদানি বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। এতে জনমনে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তি।

 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, ঝিগাতলা, কাঁঠাল বাগান ঘুরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

 

 

জানা গেছে, বাজারে তীর, ফ্রেশ, পুষ্টিসহ কয়েকটি কোম্পানির তেল পাওয়া গেলেও তা শর্তসাপেক্ষে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, কোম্পানি শর্ত দিয়ে তেল সাপ্লাই দিচ্ছে। শর্তানুযায়ী এক কার্টন তেলের সঙ্গে ১ বস্তা আটা, সুজি ও চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে কোনো ক্রেতা তেলের সঙ্গে শর্তের পণ্য না নিলে কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে।

 

বর্তমানে বাজারে খোলা পামঅয়েল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৮ টাকা, প্রতি লিটার ১৬০ টাকা দরে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও মিলছে না ১ লিটারের বোতল। ৫ লিটারের ক্যানোলা ৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৮১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

 

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি ইলিয়াস কালবেলাকে বলেন, এভাবে শর্ত দিয়ে তেল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। ফলে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল করতে হলে সরকার ও কোম্পানির মধ্যে সমঝোতা দরকার।

 

 

 

নিউমার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী আজাদ হোসেন বলেন, মূলত বাজারে তেলের সংকট তৈরি করেছে কোম্পানিগুলো। তারা তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে; কিন্তু সরকার চলমান দাম বহাল রাখতে চাপ দিচ্ছে কোম্পানিদের। এতে তেল আটকে রেখে বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে কোম্পানিগুলো।

 

এদিকে, শহরে জেঁকে বসেছে শীত। বাজারে ভরপুর মিলছে শীতকালীন সবজি। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা ও পাড়া-মহল্লার বাজারে। গত সপ্তাহের ৭০ টাকার লম্বা বেগুন ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ৬০ টাকার বাঁধাকপি ও ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ১৫০ টাকার ইন্ডিয়ান টমেটো ১৪০ টাকা, ৮০ থেকে ৯০ টাকার শিম পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, ৭০ টাকার চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, মুলা ১০ টাকা কমে ৪০-৫০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো প্রতি পিস লাউ ৫০, শালগম ৮০, লেবুর হালি ১৫-২৫, করলা ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৬০, কচুরলতি ৬০, বরবটি-ঢ্যাঁড়শ ৮০, গাজর ১০০, কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

 

শুল্ক ছাড়ের দেড় মাস পর দাম কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে নতুন আলু বাজারে এলেও দাম কমেনি পণ্যাটির। আগের মতো পুরান আলু ৭৫-৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, নতুন আলু ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া দেশি রসুন মানভেদে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা ও আমদানি রসুন ২৩০-২৪০ টাকা। এ ছাড়া ২৯০ টাকার সোনালি মুরগি ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা দরে। ১ কেজি ওজনের ১৯০ টাকার ব্রয়লার পাওয়া যাচ্ছে ২০০ টাকায়। অপরিবর্তিত ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি ৪৫-৫০ টাকা ও হাঁসের ডিমের হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।