ভালোবাসার ৭৭। এটি একটি ব্যাচের বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলা। দুটি বছর তাঁরা একসঙ্গে কাটিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কলেজে। ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে দেশের নানা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। শিক্ষাজীবন শেষে নানা পেশায় জড়িত হয়ে কীর্তিমান মানুষগুলো যে যাঁর ক্ষেত্রে হয়েছেন খ্যাতিমান। কেউ এখন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পপতি, অধ্যাপক, ব্যবসায়ী, সৈনিক, নাবিক, আমলা, গায়ক, শিল্পী, কথাসাহিত্যিক, কবি বা সাংবাদিক। তাঁরা সবাই চট্টগ্রাম কলেজের ১৯৭৭ সালের এইচএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী।
১৯৭৫ সালে স্কুলজীবনের ছোট পরিসর পেরিয়ে তাঁরা কলেজের বড় আঙিনায় পা রেখেছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা নতুন মুখের সঙ্গে পরিচয়। তারপর বন্ধুতা। এরপর মহাকালের গর্ভে অর্ধশতাব্দীকাল কেটে গেল। কিন্তু সেই বন্ধুতায় মরচে ধরেনি।
২০২৫ সাল তাঁদের বন্ধুতার সুবর্ণজয়ন্তী। এ উপলক্ষে ‘ভালোবাসার ৭৭’ আয়োজন করেছিল প্রাক্তনদের পুনর্মিলনী। ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি—তিন দিনের এই পুনর্মিলনী আয়োজিত হয় কক্সবাজারে।
ভালোবাসার ৭৭’ নামের সংগঠনের মধ্য দিয়ে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরা সেই দিনগুলো আবার ফিরিয়ে আনতে চাইলেন তাঁরা। জীবনের অবসরবেলায় বন্ধুতার বন্ধুন ঝালিয়ে নিলেন আরও একবার।
আয়োজকদের অন্যতম একজন নৌ প্রকৌশলী এস এম এ হান্নান বলেন, ‘এবারের আয়োজনটা বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে। কারণ, এ বছর আমাদের বন্ধুতার ৫০ বছর পার হয়েছে। বয়স যত বাড়ছে, আমাদের তারুণ্য তত বাড়ছে। যৌবনের শক্তি, কাজের প্রেরণা আমরা ধরে রেখে প্রচলিত ধারণাকে ম্লান করে দিতে চাই। ’
‘ভালোবাসার ৭৭’–এর অন্যতম সদস্য দেশবরেণ্য কণ্ঠশিল্পী নকীব খান। পুনর্মিলনীতে আসা শিল্পী নকিব বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজের দিনগুলো ছিল অসামান্য সৃজনশীল একসময়। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আমরা মগ্ন ছিলাম সৃষ্টিশীল কাজে। তখন অনেক বিখ্যাত গান রচিত হয়েছে চট্টগ্রাম কলেজে। সোলস এবং কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া গান ‘তোরে পুতুলের মতো সাজিয়ে’ গানটি শ্রেণিকক্ষে বসে লিখেছেন।’
ভালোবাসার ৭৭ চট্টগ্রাম কলেজ এইচএসসি এসোসিয়েশন এর অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা অধ্যাপক ডা. এম. আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘ভালোবাসার-৭৭ সংগঠন চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র ছাত্রী দের বৃত্তি প্রদান, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় সহায়তাসহ অনেক সামাজিক কাজ করে থাকে। এই সংগঠন আমাদের ভালোবাসার আশ্রয়স্থল। যা আমৃত্যু থাকবে।’