চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বন্য হাতির আক্রমণে সিবাগতুল্লাহ রিজভী (১৬) এক কিশোর নিহত হয়েছে। বুধবার (১ মে) ভোর রাতে উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বৈলছড়ি ৪ নম্বর ওয়ার্ড গোদারপাড়-সংলগ্ন লিচু বাগানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর সিবাগতুল্লাহ রিজভী বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি কুলীনপাড়া এলাকার মৃত তৈয়ব উল্লার ছেলে।
নিহত কিশোরের পারিবারিক সূত্র জানা যায়, ‘নিহত রিজভী বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নুন্না পুকুরপাড় এলাকার একটি মুদি দোকানের কর্মচারী ছিল। ভোর রাতে লিচুবাগানে হাতি আসার খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে রিজভীও হাতি দেখতে বের হয়। একপর্যায়ে হটাৎ হাতির সামনে পড়লে হাতি শুঁড় দিয়ে তুলে তাকে বেশ কয়েকবার আছাড় মারে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
সিবাগাতুল্লাহর মামাতো ভাই সাংবাদিক মিজান বিন তাহের বলেন, ‘রাতে হাতির আক্রমনে আমার ভাই মারাত্মক ভাবে আহত হয়। আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলার স্থানীয় একটি হাসপাতালে পরে সিএমসি হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত কিশোরের বড় ভাই মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ‘ছোট ভাই রিজভী স্থানীয় একটি মুদিদোকানে চাকরি করত। রাতে ওই দোকানের মালিকের লিচুবাগানে হাতি আসার খবর পেয়ে সে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সেখানে যায়। ওই সময় হটাৎ হাতি তাঁর সামনে চলে আসে। এতে হাতি তাঁর ওপর আক্রমণ চালায়।’
বৈলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, ‘রাতে গোদারপাড় এলাকায় হাতি আসার খবর পেলে গ্রামবাসী তাঁদের ক্ষেত রক্ষা করার চেচামেচি করে হাতিকে সরিয়ে দেয়ার জন্য বের হয়। ছেলেটা উৎসুক হয়ে সেখানে যায়। এতে রাতের অন্ধকারে হাতির সহজ শিকার হয়ে মারা গেল। এই বিষয়ে কালীপুর রেঞ্জ অফিসারকে অবহিত করেছি।’
কালীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এমন মৃত্যু শুধু অপ্রত্যাশিত নয় পীড়াদায়কও বটে। নিয়মিত প্রচার প্রচারণা চালানোর পরেও হাতির কাছে গিয়ে মৃত্যুর শিকার হচ্ছে মানুষ। কি বলব.?। পাহাড় থেকে হাতির প্রিয় খাবার ফুল ঝাড়ু নিয়মিত কেটে ফেলা হচ্ছে, যার কারণে হাতি লোকালয়ে চলে আসতেছে। এ ঘটনায় কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের আবেদন করা হলে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’